সোমবার ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনের দখলকৃত ছঅল ভূখণ্ডে আয়োজিত গণভোটে বিজয়ের দাবি করলো রাশিয়া

বিশ্ব ডেস্ক   |   বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট  

ইউক্রেনের দখলকৃত ছঅল ভূখণ্ডে আয়োজিত গণভোটে বিজয়ের দাবি করলো রাশিয়া

ইউক্রেনে রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চলে যে তথাকথিত গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে সেটির মাধ্যমে সেসব জায়গাকে রাশিয়া তাদের অংশ করে নিতে ব্যবহার করতে পারে। দখলকৃত অঞ্চলে মস্কোর নিযুক্তরা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই গণভোটে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় সবাই রাশিয়ার অংশে যুক্ত হওয়ার জন্য মত দিয়েছে।

অন্যদিকে এই গণভোটকে ‘জালিয়াতি’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে ইউক্রেন এবং তার মিত্র দেশগুলো। তবে এই গণভোট আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে এর প্রক্রিয়া স্বাধীনভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দোনেতস্ক ও লুহানস্ক এবং দক্ষিণাঞ্চলে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে এই গণভোট আয়োজন করা হয়। গণভোট থেকে প্রাপ্ত আংশিক ফলাফলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ব্যাপক সংখ্যক মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এসব অঞ্চলে প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এ চারটি অঞ্চল ইউক্রেনের মোট ভূমির প্রায় ১৫ শতাংশ। দোনেতস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলে রুশপন্থি বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা খবর দিচ্ছে, ৯৯.২৩ শতাংশ মানুষ রাশিয়ায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে।

গণভোটের ক্ষেত্রে এ ধরনের ফলাফল বেশ অস্বাভাবিক। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার পার্লামেন্টের এক যৌথ অধিবেশনে এ চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়ার ঘোষণা দেবেন।

এর আগে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে একই ধরনের একটি গণভোটের আয়োজন মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে গণভোটও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেনি।

এদিকে, রাশিয়া যদি এই চারটি অঞ্চলকে নিজেদের অংশ করে নেয়, তখন যুদ্ধ আরেকটি ভিন্ন এবং বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এসব অঞ্চল ফিরে পাওয়ার জন্য ইউক্রেন যখন যুদ্ধ করবে তখন সেটিকে রাশিয়া তাদের সার্বভৌম ভূমিতে হামলা হিসেবে বিবেচনা করবে।
জোর করে চারটি অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টাকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কি জাতিসংঘ সনদের চরম লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দখল করা এলাকাগুলোতে এ ধরনের প্রহসনকে গণভোটের নকলও বলা যায় না।’

অপরদিকে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে এই গণভোট বাস্তবায়নের সাথে যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদের ওপর ইতোমধ্যেই নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ব্রিটেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন আবারও বলেছেন, ইউক্রেনের এসব অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ করে নিলে সেটিকে পাশ্চাত্য কখনোই স্বীকৃতি দেবে না।

গণভোট নিয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, সব দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।

অন্যদিকে এই গণভোটকে সমর্থন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, এসব অঞ্চলে বসবাসরত জাতিগত রাশিয়ান এবং রাশিয়ান ভাষাভাষী জনগণের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করার জন্য এই আয়োজন করা হয়েছে।

যদিও (জাতিগত রাশিয়ান এবং রাশিয়ান ভাষাভাষী জনগণের ওপর) কোনো ধরনের দমন-পীড়নের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে ইউক্রেন। কিয়েভ থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জেমস ওয়াটার হাউস-এর বিশ্লেষণ হচ্ছে, চারটি অঞ্চলে গণভোটের যে ফলাফল আসবে সেটিতে অবাক হবার মতো তেমন কিছুই থাকবে না।

ওয়াটারহাউস’র মতে, এ গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়া ইউক্রেনে তাদের অবস্থানের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৩৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

nypratidin.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর...

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আবু তাহের

নির্বাহী সম্পাদক : লাবলু আনসার