রবিবার ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের পরলোকগমন

বিনোদন ডেস্ক:   |   সোমবার, ০১ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট  

সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের পরলোকগমন

ভারতের কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র আর নেই। শনিবার (৩০ জুলাই রাতে নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। দক্ষিণ কলকাতার চেতলায় নিজের বাড়িতে স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। পরিবারে তার স্বামী, পুত্র এবং পুত্রবধূ রয়েছেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

শিল্পীর চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই নির্মলা অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য গত ৫ বছরে বেশ কয়েক বার হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন। তিনবার হৃদরোগে আক্রান্তও হয়েছেন। তিন-চার দিন আগে অসুস্থতা হঠাৎই বাড়ে। গত বৃহস্পতিবার ২৯ জুলাই তাঁর রক্তচাপ বেশ খানিকটা কমে যায়। কিন্তু তিনি আর হাসপাতালে যেতে চাইছিলেন না। শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। রাতে তিনি মারা যান।

নির্মলার ছেলে শুভদীপ দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, পরিবারের সবার চোখের সামনেই মা চলে গেল। ২০১৫-তে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়। তারপর থেকেই শরীরের একটা পাশে পক্ষাঘাত। তখন থেকেই বিছানায় পুরো শোওয়া থাকতেন মা। ২০১৮ থেকে ২০২২— এই চার বছর হাসপাতাল আর বাড়ি করেছে। শনিবার সকাল থেকেই শ্বাসকষ্ট। তার পর রাতে সব শেষ।

৩১ জুলাই নির্মলার শেষকৃত্য হয়। তার ছেলে জানিয়েছেন, নার্সিংহোম থেকে নির্মলার দেহ প্রথমে বাড়িতে আনা হয়। সেখান থেকে রবীন্দ্রসদন, রাজ্য সংগীত অ্যাকাডেমি হয়ে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশান। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে রবীন্দ্রসদনে এদিন বেলা ১১টা থেকে প্রয়াত সংগীতশিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়।

নির্মলার বিখ্যাত গানের মধ্যে অন্যতম এমন একটা ঝিনুক খুঁজে পেলাম না, সেই একজন দিও না তাকে মন, আবেশে মুখ রেখে, বলো তো আরশি তুমি, আমি তো তোমার হাসি কান্নার চিরদিনের সাথী, কাগজের ফুল বলে, ও তোতা পাখি রে… ইত্যাদি।

তার জন্ম অধুনা দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, ১৯৩৮ সালে। তাঁর বাবা পণ্ডিত মোহিনীমোহন মিশ্র এবং মা ভবানীদেবী। বাবার চাকরিসূত্রেই তাঁদের কলকাতায় আসা। ষাটের দশকের একেবারে শুরুতে সংগীত জগতে তাঁর প্রবেশ।

বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক বিবৃতিতে লিখেছেন, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কণ্ঠের জাদুতে তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলেন। তাঁর গাওয়া অজস্র কালজয়ী গান আজও শ্রোতাদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। আধুনিক, নজরুলগীতি, শ্যামাসংগীত, দেশাত্মবোধক, লোকগীতি ছাড়াও বহু ছায়াছবিতে তিনি গান গেয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমির উপদেষ্টা পরিষদ ও বাংলা সংগীতমেলা কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যা ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১২ সালে ‘সংগীতসম্মান’ এবং ২০১৩ সালে ‘সংগীত মহাসম্মান’ ও ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মাননা প্রদান করে। নির্মলা মিশ্রের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। তাঁর প্রয়াণে সংগীত জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। আমি নির্মলা মিশ্রের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:০১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ আগস্ট ২০২২

nypratidin.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর...

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930 

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আবু তাহের

নির্বাহী সম্পাদক : লাবলু আনসার