বিশেষ সংবাদদাতা | শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট

এটর্নী নূসরাত চৌধুরী। ছবি-বাংলাদেশ প্রতিদিন।
১৭ মাসের টানাপোড়েনের পর ১৫ জুন বৃহস্পতিবার ৫০-৪৯ ভোটে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন পেলেন বাংলাদেশি আমেরিকান নূসরাত চৌধুরী (৪৭)। গত বছরের ১৯ জানুয়ারি সিনেট লিডার (ডেমক্র্যাট-নিউইয়র্ক) চাক শ্যুমারের অনুরাধে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিউইয়র্ক ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ফেডারেল বিচারপতি হিসেবে মনোনয়ন দেন নূসরাত চৌধুরীকে।
এরপর প্রচলিত রীতি অনুযায়ী গত বছরের ২৭ এপ্রিল তা সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটিতে আলোচনার টেবিলে উঠে। কমিটির সদস্যরা ২৬ মে ১২-১০ ভোটে তা নাকচ করে দেয়। এ অবস্থায় এ বছরের ৩ জানুয়ারি মনোনয়নটি প্রেসিডেন্ট সমীপে ফেরৎ পাঠানো হয়। এরপর একইদিন সন্ধ্যায় ইউএস সিনেটের xxx1 এর প্যারাগ্রাফ ৬ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাকে পুনরায় মনোনয়ন দেন। তার ওপর সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটিতে আবারো ভোট হয় গত ৯ ফেব্রুয়ারি। সেদিনও ১১-১০ ভোটে নাকচ হয়ে যায় মনোনয়নটি। এরপর বিশেষ বিধির বলে ১৪ জুন বুধবার সিনেটের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভোটাভুটি হয়। সেখানেও ৪৯-৫০ ভোটে ধরাশায়ী হয় মনোনয়নটি। সে সময় সিনেটে রিপাবলিকান নেতা সিনেটর জো ম্যানশিন বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। রাতভর আলোচনা-পর্যালোচনার পর ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সিনেটর জো ম্যানশিন তার মত পরিবর্তন করে মনোনয়নের পক্ষে অবস্থান নিলে ৫০-৪৯ ভোটে নূসরাত চৌধুরীর ভাগ্য প্রসন্ন হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্ট আরেকটি নয়া ইতিহাসের সাক্ষী হলেন। কারণ, তিনি হলেন কোন ফেডারেল কোর্টে প্রথম মুসলমান নারী বিচারক, এবং দ্বিতীয় মুসলমান (পুরুষদের মধ্যে) বিচারক। এছাড়া তিনি হলেন প্রথম বাংলাদেশী আমেরিকান বিচারক। উল্লেখ্য, তাকে মনোনয়নের প্রস্তাবকারি সিনেটর চাক শ্যুমার দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় সিনেটের অনুমোদন লাভের পর প্রচন্ড উচ্ছ্বাসের সাথে বলেন, আমি নিশ্চিত যে মিসেস চৌধুরীর প্রচন্ড বুদ্ধিমত্তা এবং একজন প্রতিভাবান-নিবেদিত আইনজীবী হিসেবে দীর্ঘদিনের প্রজ্ঞা তাঁকে ফেডারেল বেঞ্চে সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজের সহায়ক হবে।
তিনি বাস্তবতার আলোকে প্রকৃত সত্য অনুসরণ করবেন এবং বিদ্যমান আইনের আওতায় ন্যায় বিচার পরিচালনা করবেন।’ সিনেটর শ্যুমার উল্লেখ করেন, নূসরাত চৌধুরী আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের আইন পরিচালক হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সাথে কাজ করেছেন। নাগরিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থেকে বিগত দিনে বেশ কিছু মামলা পরিচালনায় অনন্য এক নজির স্থাপন করেছেন। তাই নিউইয়র্ক ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের বিচারক হিসেবে নূসরাতের ভূমিকা সকলের প্রত্যাশার পরিপূরক হবে এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। তার এ নিয়োগে আমি গৌরববোধ করছি। সিনেটর শ্যুমার উল্লেখ করেন, নূসরাত হলেন অভিবাসী সমাজের আমেরিকান স্বপ্নের পথ-প্রদর্শক। তার বাবা ৪০ বছর আগে থেকে শিকাগোতে বাস করছেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন ‘ফুলব্রাইট স্কলারশিপ’ নিয়ে। তার আমেরিকান স্বপ্ন-সারথী হিসেবে নূসরাত গ্র্যাজুয়েশন করেন কলম্বিয়া, প্রিন্সটন এবং ইয়েল ল’ স্কুল থেকে। এরপর কর্মজীবনে তিনি ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের ন্যায্য অধিকারের ব্যাপারে ন্যায়নিষ্ঠ ছিলেন। সে আলোকে আমি আশা করছি বিচারের কাঠগড়ায় আসা কেউই হতাশ হবেন না।
নূসরাত চৌধুরী ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমেরিকান বার এসোসিয়েশনে সিভিল রাইটস এবং সোস্যাল জাস্টিস সেকশনের মেম্বার ছিলেন। আমেরিকার বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমেরিকানদের আস্থা সুসংহত করতে প্রেসিডেন্সিয়াল টাক্স ফোর্সের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকারি নূসরাত বৃহত্তর শিকাগো অঞ্চলে এশিয়ান-আমেরিকান বার এসোসিয়েশনেরও সদস্য ছিলেন। শিকাগোস্থ দক্ষিণ এশিয়ান বার এসোসিয়েশনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন এটর্নী নূসরাত চৌধুরী।
বহুজাতিক সমাজের বিচার ব্যবস্থায় বিশেষ ভূমিকা পালনরত নিউইয়র্ক ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টের বিচারক হিসেবে নূসরাত চৌধুরীর মনোনয়ন এবং শেষ পর্যন্ত সিনেট থেকে অনুমোদন লাভে নিরলসভাবে কাজের জন্যে প্রবীন সিনেটর চাক শ্যুমারকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া।

Posted ৪:১০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
nypratidin.com | Nabil Nizam







আর্কাইভ ক্যালেন্ডার
| Sun | Mon | Tue | Wed | Thu | Fri | Sat |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | ||||||
| 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
| 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
| 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
| 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
| 30 | ||||||

