লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র | শনিবার, ১০ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট

সদ্য পদত্যাগী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চান বলে কোনো তথ্য নেই বাইডেন প্রশাসনে। র্যাবের ৭ শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সংস্থাটির বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার মত কোনো কিছু এখনো ভাবছে না মার্কিন প্রশাসন। সেনাবাহিনী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেয়া সত্বেও বহুস্থানে হামলা, বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটতরাজের পর অগ্নি সংযোগ, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণের সংবাদে স্টেট ডিপার্টমেন্ট গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এমন মন্তব্য এসেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রশ্নের জবাবে। ৯ অগাস্ট সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র (ইলকিন্স ভেরনিকা এম) এ সংবাদদাতাকে জানান, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নেয়ায় আমরা তাকে অভিনন্দিত করেছি। স্টেট ডিপার্টমেন্টকে ৩টি প্রশ্ন করা হয়েছিল লিখিতাকারে। এখানে তা জবাবসহ উল্লেখ করা হলো।
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের র্যাব এবং এই সংস্থার শীর্ষ ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। সময়ের পরিক্রমায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র কী সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার কথা ভাবছে?
জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায়, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় আচরণ পরিবর্তন/সংশোধন এবং জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ে। র্যাব এবং এর সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের পাশাপাশি সংস্থাটির আচরণে প্রকৃত অর্থেই যে পরিবর্তন এসেছে তা দেখতে চায়। আমরা নিষেধাজ্ঞাসমূহের কারণ পর্যালোচনা করি না। এই মুহূর্তে বলার মত আমাদের কাছে আর কিছু নেই।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়েছেন। শোনা যাচ্ছে যে, ভার্জিনিয়ায় বসবাসরত একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় বাকিটা জীবন কাটাতে আগ্রহী সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র কী শেখ হাসিনাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেবে? জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেন, আমাদের কাছে তাঁর (শেখ হাসিনা) এমন পরিকল্পনার কোনোই তথ্য নেই।
পদত্যাগের পরই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছেন। তারপরই সেনা প্রধান সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নেন। এতদসত্বেও গত কদিন ধরেই হত্যা, খুন, লুটতরাজের পর বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটছে। তা অব্যাহত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র কী ভাবছে?
জবাবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের ঐ মুখপাত্র বলেছেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা অনুধাবন করছি যে, পর্যাপ্ত পুলিশের উপস্থিতি না থাকায় সামরিক বাহিনী নিরাপত্তা প্রদান করছে। কিন্তু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সহিংসতা এবং গুরুতরভাবে আক্রমণের সংবাদে আমরা উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় আমরা সকল মহলকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকা এবং সৃষ্ট অস্থিরতা/টেনশন কমানোর জন্যে আমাদের আহবান পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের শান্ত থাকার আহবানকে স্বাগত জানাচ্ছি।
এদিকে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা গ্রহণের পর ডেমক্র্যাটিক পার্টির ৩ প্রভাবশালী কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, আলেক্সান্দ্রিয়া-ওকাসিয়ো করটেজ এবং নিদিয়া ভ্যালেস্কুয়েজ ৯ অগাস্ট এক যুক্ত বিবৃতিতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগে বাধ্য হয়ে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে অস্থিরতা-অচলাবস্থা বিরাজ করছে তার স্থায়ী সমাধান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গণতন্ত্রে উত্তরণের ক্ষেত্র তৈরীতে ড. ইউনূস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবেন বলে তারা মনে করছেন। কংগ্রেসওম্যানরা বিশেষভাবে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলমান আক্রমণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তা অবিলম্বে থামানোর আহবানও জানিয়েছেন।
তারা উল্লেখ করেছেন, ছাত্রদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সময় পুলিশের সাথে সংঘাতে হতাহত হয়েছে বহু মানুষ। সে সব মানুষের স্বজনের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানাাচ্ছি। নিহতদের এবং আহতদের অনেক স্বজন নিউইয়র্কে বাস করছেন। তারা যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে পারবো।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে কংগ্রেসের আরো ১৯ সদস্যের সাথে এই তিন কংগ্রেসওম্যানও পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্তোনি ব্লিঙ্কেনের কাছে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফেরার প্রত্যাশা পূরণের সহযোগিতা দ্বিগুণ করার অনুরোধে।

Posted ১:২৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১০ আগস্ট ২০২৪
nypratidin.com | Sharif Khan







আর্কাইভ ক্যালেন্ডার
| Sun | Mon | Tue | Wed | Thu | Fri | Sat |
|---|---|---|---|---|---|---|
| 1 | ||||||
| 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 |
| 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 |
| 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 |
| 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 |
| 30 | ||||||

