রবিবার ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ

পাকিস্তানে বন্যার্তদের বহনকারী নৌকা ডুবে ১৩ জনের প্রাণহানি

বিশ্ব ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট  

পাকিস্তানে বন্যার্তদের বহনকারী নৌকা ডুবে ১৩ জনের প্রাণহানি

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির এক-তৃতীয়াংশ এখন পানির নিচে। এছাড়া বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। যদিও বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে কাজ করছেন দেশটির কর্মীরা।

এই পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে দুর্গত মানুষকে নিরাপদ স্থানে নেওয়ার সময় পাকিস্তানে একটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএনআই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে ফুলে-ফেঁপে ওঠা সিন্ধু নদীতে বন্যার্তদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। সিন্ধ প্রদেশের সেহওয়ান শহরের বিলাওয়ালপুর গ্রামের কাছে নৌকাটি ডুবে যায়। এতে প্রায় ২৫ জন আরোহী ছিলেন।

স্থানীয় জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, বন্যাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে; আটজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। জিও নিউজ জানিয়েছে, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে করে প্রায় ২৫ বন্যার্তকে জলমগ্ন এলাকা থেকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

পাকিস্তান সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনী বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে ভয়াবহ এই বন্যার কারণে পাকিস্তানে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (ওসিএইচএ)-এর তথ্য অনুসারে, দেশটিতে এখনও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে এবং এর কারণে বন্যা ও ভূমিধসের ফলে দেশজুড়ে বাস্তুচ্যুতি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও বাড়ছে।

মূলত বর্তমানে পাকিস্তান তার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বর্ষণজনিত বন্যা মোকাবিলা করছে। দেশটির ৬৬টি জেলাকে পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দুর্যোগের শিকার’ বলে ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বেলুচিস্তানের ৩১টি, সিন্ধ প্রদেশের ২৩টি, খাইবার পাখতুনখোয়ার (কেপি) নয়টি এবং পাঞ্জাবের তিনটি জেলা রয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় দুর্যোগ-ঘোষিত জেলার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) জানিয়েছে, চলমান বন্যায় পাকিস্তানে ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের তথ্য অনুসারে, গত ১৪ জুন থেকে পাকিস্তানে বন্যায় ২ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ৪ লাখ ৫২ হাজার বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়া চলমান এই বন্যায় পাকিস্তানে ৭ লাখ ৯৩ হাজারেরও বেশি গবাদিপশু মারা গেছে। মৃত এসব গবাদিপশুর প্রায় ৬৩ শতাংশ বেলুচিস্তানের এবং ২৫ শতাংশ পাঞ্জাবের। এসব পশু অনেক পরিবারের জন্য ভরণপোষণ এবং জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস ছিল।

কর্মকর্তাদের মতে, গত জুনে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর সৃষ্ট এই বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৬ জন মারা গেছে। গত এক দশকের মধ্যে রেকর্ড করা সবচেয়ে ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার জন্য পাকিস্তানের সরকার জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যায় আরও ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:১৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট ২০২২

nypratidin.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর...

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930 

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আবু তাহের

নির্বাহী সম্পাদক : লাবলু আনসার