
নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ৩১ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট
র্যালিতে বক্তব্য দিচ্ছেন মীনা ফারাহ। সামনে পোস্টার হাতে মীর কাশেম আলীর ভাইসহ অন্যেরা। ছবি-বাংলাদেশ প্রতিদিন।
‘বলপূর্বক গুমের শিকারদের আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে ৩০ আগস্ট মঙ্গলবার অপরাহ্নে জাতিসংঘের সামনে ‘বাংলাদেশী আমেরিকান কনসার্ন সিটিজেন’ এবং ‘দ্য কোয়ালিশন ফর হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড ডেমক্র্যাসী ইন বাংলাদেশ’ নামক দুটি সংগঠনের উদ্যোগে এক র্যালিতে মূলত: জামাত-শিবিরের লোকজনকেই দেখা গেল। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মুষ্টিমেয় কয়েকজন বক্তব্য দিলেও তাদেরকে ‘কম্যুনিটি এ্যাক্টিভিস্ট’ হিসেবে উপস্থাপন করা হলো।
এক পর্যায়ে বিএনপির নো-কর্মীরা নিজস্ব ব্যানার হাতে নিয়ে দাঁড়ালে কথিত মানবাধিকার সংগঠনের কিছু কর্মী উত্তেজিত হয়ে উঠেছিলেন। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারিদের মধ্যে একাত্তরের ঘাতক হিসেবে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত মীর কাশেম আলীর ভাই মীর মাসুম আলীকেও সপরিবারে দেখা গেছে। তার হাতে ছিল ঘাতক মীর কাশেমের পুত্র ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান’র ছবি সংবলিত পোস্টার। লেখা ছিল ‘ফ্রি আরমান /মিসিং সিন্স ২০১৬’। প্রত্যেকের হাতে ছিল গুম হওয়া স্বজনের নাম লেখা পোস্টার। ‘মায়ের ডাক’ নামক একটি সংগঠনের পোস্টারও দেখা গেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে শতশত বাংলাদেশিকে গুম করার অভিযোগ উত্থাপন করে বক্তব্যকালে নিউইয়র্কের মীনা ফারাহ নামক সাবেক এক ডেন্টিস্ট বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত বাংলাদেশে মানবাধিকার-সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে না।
বাংলাদেশে কোন নির্বাচন হবে না। আগে গণভবন খালি করতে হবে। তারপর গুম-খুনের বিচারে শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় নিতে হবে।’ উল্লেখ্য, মীনা ফারাহ ছিলেন একাত্তরের ঘাতক হিসেবে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত শেরপুরের আলবদর কমান্ডার ও পরবর্তীতে জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান সাক্ষী। এজন্যে তিনি নিউইয়র্ক থেকে ঢাকা গিয়েছিলেন কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সাক্ষী দিতে যাননি। অধিকন্তু ঐ মামলার তারিখের পর থেকেই তিনি নিউইয়র্কে ফিরে ‘দৈনিক নয়া দিগন্ত’ পত্রিকার নিয়মিত কলামিস্ট হয়েছেন। এ নিয়ে নানা কথা রয়েছে কম্যুনিটিতে।
বিএনপি নেত্রী রিটা রহমান বলেছেন, মানবাধিকার বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। এহেন অবস্থার অবসানে গোটাবিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতিসংঘের হস্ত প্রসারিত করতে হবে।
বিএনপির নিউইয়র্ক স্টেট শাখার আহবায়ক মাওলানা অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘ঘর থেকে বাইরে যাবার পর সহি সালামতে সেই মানুষটি ঘরে ফিরবেন-এমন নিশ্চয়তা যে সরকার দিতে পারে না, সেই শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার অধিকার থাকতে পারে না।’
নিউইয়র্ক মহানগর (দক্ষিন) বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা ক্ষমতাসীন সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ৯/১১ পরবর্তী সময়ের ন্যায় সকল দেশপ্রেমিক প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করতে হবে।
‘দ্য কোয়ালিশন ফর হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড ডেমক্র্যাসী ইন বাংলাদেশ’র কর্মকর্তা এবং একুশে টিভির সাবেক যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি ইমরান আনসারী বলেন, ‘একটি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বর্তমান আমলে ৬ শত মানুষ গুম হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশী।’
একই আহবান জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মিল্টন ভূঁইয়া, জসীম ভ’ইয়া, গোলাম ফারুক শাহীন, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির আহবায়ক মাওলানা অলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর (উত্তর) বিএনপির আহবায়ক আহবাব চৌধুরী, মুনার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহতাবউদ্দিন প্রমুখ। এ র্যালি পরিচালনা করেন মুনার মিডিয়া সম্পর্কিত কর্মকর্তা মাহবুব।
র্যালি চলাকালে একদল তরুণ অনবরত শেখ হাসিনা-বিরোধী স্লোগান দেয়ায় অনেকের বক্তব্য শোনা যাচ্ছিল না দেখে স্লোগান থামাতে বলার পর পাল্টা উত্তেজনা, ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে তা বেশীদূর গড়ায়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা উল্লেখ করেছেন। বিকেল ৪টায় শুরু এ র্যালি শেষ হয় ঠিক ৫টায়। এক ঘন্টার অনুমতি নেয়া হয়েছিল বলে আয়োজকরা জানান। আর এটি অনুষ্ঠিত হয় ৪২ স্ট্রিট ও ফার্স্ট এভিনিউতে অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের র্যালি থেকে কয়েক শতগজ দূরে।
Posted ১২:২৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ৩১ আগস্ট ২০২২
nypratidin.com | Nabil Nizam
আর্কাইভ ক্যালেন্ডার
Sun | Mon | Tue | Wed | Thu | Fri | Sat |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
29 | 30 |