
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
আনোয়ার হোসেন। ছবি-বাংলাদেশ প্রতিদিন।
প্রবাস-বান্ধব সরকারের কোন কোন পদক্ষেপ প্রবাসীদেরকে বিব্রত করছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। নিয়ে দেন-দরবারও হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বিশেষ করে এনআইডি কার্ড সিস্টেম।
এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্কে নিরব সমাজকর্মী এবং রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর আনোয়ার হোসেন এ সংবাদদাতার কাছে আক্ষেপ করেছেন, ‘দেশপ্রেমে তাড়িত হয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বহন করা সত্বেও এবার যখন সোনালী এক্সচেঞ্জে (সোনালী ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান) গেলাম তখোন আমাকে জানানো হলো যে এনআইডি কার্ড ছাড়া আপনি ফরেন এক্সচেঞ্জ একাউন্ট খুলতে পারবেন না। এতে আমি বিস্মিত হয়েছি, হতবাক হয়েছি।
কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারপোর্ট অতিক্রমের সময় বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তির্যক দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন কোন দেশের কাস্টমস কর্মকর্তারা। এতদসত্বেও আমি আমার দেশকে ভালবাসি, তাই সেই পাসপোর্ট বহন করছি। দীর্ঘ ৩০ বছরেরও অধিক সময় পর আমার মনে হচ্ছে যে, বাংলাদেশি পাসপোর্ট রেখে আমি অন্যায় করেছি। এবং আরেকটি বিষয় খুব অবাক লাগে যে, এনআইডি কার্ড মনে হচ্ছে পাসপোর্টকে অবদমিত করছে। এটা বিশ্বাস করতেও লজ্জা লাগে। কারণ, আমার গ্রীণকার্ড আছে। সেটি দেখালে কিংবা যারা আমেরিকান পাসপোর্ট বহন করেন, সেটি দেখানোর পর স্টেট আইডির কোনই প্রয়োজন হয় না।
তাহলে কেন বাংলাদেশের পাসপোর্ট এনআইডির পরিপূরক হবে না, কেন পাসপোর্টে এফসি একাউন্ট করতে পারবো না? নানাবিধ কারণে গত ৮/৯ বছর আমি বাংলাদেশে যেতে পারিনি বলে এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করার সুযোগ হয়নি। এজন্যে প্রচন্ড ইচ্ছা থাকা সত্বেও আমি মাতৃভ’মিতে বিনিয়োগের সুযোগ নিতে সক্ষম হচ্ছি না একাউন্ট খোলা সম্ভব না হওয়ায়।’
নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় সপরিবারে বসবাসরত খুলনার সন্তান আনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন, আমার স্ত্রী-সন্তানেরা সিটিজেনশিপ নিয়েছেন। তারা আমেরিকার পাসপোর্ট বহন করছেন। কিন্তু আমি নেইনি লাল-সবুজের বাংলাদেশের আবহে বাকিটা জীবন অতিবাহিত করার অভিপ্রায়ে। এ অবস্থায় মাঝেমধ্যেই নানা ধরনের বিড়ম্বনা দেখলেই স্ত্রী-সন্তানেরা তিরস্কার করেন। আমার মত আরো অনেক প্রবাসী এমন পরিস্থিতির মধ্যে নিপতিত হয়েছেন। এর অবসান দরকার।
মন্ত্রী, এমপি, আমলা, স্পিকার, প্রেসিডেন্ট সকলেই প্রবাসীদের আহবান জানান বিনিয়োগের জন্যে। অথচ সহজে বিনিয়োগের ক্ষেত্র এখনও তৈরী করা হয়নি। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে সোনালী ব্যাংকের একটি পূর্ণাঙ্গ শাখা খোলার দাবির প্রতিও সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক কোন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এমনকি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস কিংবা নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলেস কন্স্যুলেটে বিনিয়োগ-সেল খোলার ব্যাপারেও কোন তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অথচ বিনিয়োগের স্বার্থেই এগুলো জরুরী।
মার্কিন পাসপোর্টে জন্মস্থান লেখা রয়েছে বাংলাদেশ। সেটিই বড় প্রমাণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্মগত অধিকারের প্রসঙ্গ। সেই পাসপোর্টকেও এনআইডির বিকল্প ভেবে নেয়া যায়। এছাড়া বাংলাদেশী পাসপোর্টকেও এনআইডির চেয়ে অধিক মর্যাদাসম্পন্ন ভাবা উচিত। কারণ, এখন সকলেই মেশিনে রিডেবল পাসপোর্ট বহন করছেন। এনআইডির পরিপূরক সকল তথ্য রয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অসংখ্য বাংলাদেশী রয়েছেন যারা অভিবাসনের মর্যাদা পাননি বলে বহুবছর যাবত দেশে যেতে পারছেন না। তারা এনআইডি পাবেন কীভাবে? যুক্তরাষ্ট্রে বেশ ক’জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন, যারা এখনও নানাবিধ কারণে দেশে যেতে সক্ষম না হওয়ায় মাসিক ভাতা থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। একইভাবে অভিবাসনের মর্যাদাহীনরা আর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্বেও বাংলাদেশে কোন সহায়-সম্পদ ক্রয় করতে পারছেন না। বিক্রির ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।
সামগ্রিক অবস্থার আলোকে প্রবাসীরা দাবি জানিয়েছেন এনআইডির বিকল্প হিসেবে পাসপোর্টকে বেছে নেয়ার নির্দেশ জারির জন্যে। এছাড়া, জন্মস্থান বাংলাদেশ লেখা রয়েছেন এমন বিদেশী পাসপোর্টকেও এনআইডির বিকল্প ভাবা উচিত। ডিজিটাল বাংলাদেশে পশ্চাৎমুখীতাকে প্রবাসীরা সহজভাবে নিতে চাচ্ছেন না। সম্মুখে এগিয়ে চলার স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমীপে উপরোক্ত সমস্যার সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন প্রবাসীরা। এক্ষেত্রে নিউইয়র্কসহ ওয়াশিংটন দূতাবাসে, কানাডার টরন্টো, মন্ট্রিয়ল, অটোয়া দূতাবাসে এনআইডি কার্ড ইস্যুর ব্যবস্থা করার মাধ্যমেও উদ্ভ’ত পরিস্থিতির সমাধান করা সম্ভব বলে অভিজ্ঞজনেরা উল্লেখ করেছেন।
Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
nypratidin.com | Nabil Nizam
আর্কাইভ ক্যালেন্ডার
Sun | Mon | Tue | Wed | Thu | Fri | Sat |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | ||
6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 |
13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 |
20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 |
27 | 28 | 29 | 30 | 31 |