রবিবার ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মস্কোর উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নির্বোধ, উন্মাদ : পুতিন

প্রতিদিন ডেস্ক   |   শনিবার, ১৮ জুন ২০২২ | প্রিন্ট  

মস্কোর উপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নির্বোধ, উন্মাদ : পুতিন

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করাকে ‘নির্বোধ’ এবং ‘উন্মাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর বিবিসি, আলজাজিরা।

পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে বাধ্য হয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে বসবাসরত রুশ নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য এই অভিযান জরুরি ছিল।

রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও বন্দর নগর সেন্ট পিটার্সবার্গে শুরু হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামের (এসপিআইইএফ) সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন পুতিন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপে ফেলতে কোনো চিন্তাভাবনা না করে ঝড়ের মতো একের পর এক নির্বোধ ও উন্মাদ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কখনও সফল হবে না।’

‘কারণ মানসিক দৃঢ়তা রাশিয়ার জনগণের জাতিগত বৈশিষ্ট। আমরা যে কোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারি এবং তাতে জয়ী হতে পারি। আমাদের পূর্বসূরীদের মতো আমরাও যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে পারি। রাশিয়ার হাজার বছরের ইতিহাসে অসংখ্যবার এটি প্রমাণিত হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।

১৭ জুন ১১২তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে। বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের সেভারদনেতস্ক শহরে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ বাহিনীর।

এদিকে, ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে আসছে— ইউক্রেন দখল করাই ছিল রাশিয়ার মূল উদ্দেশ্য এবং এই অভিযানের ‘নীলনকশা’ অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত করে রেখেছিল মস্কো। ভাষণে সেই অভিযোগ খারিজ করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি মন্তব্য করেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্যে দিয়ে ‘শীতল যুদ্ধের’ সমাপ্তির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রীক যে বিশ্বব্যবস্থা চলছে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের মধ্যে দিয়ে তার পতন শুরু হয়েছে।

পুতিন বলেন, ‘কিয়েভ ও পশ্চিমা বিশ্ব প্রচার করছে— রাশিয়া এই যুদ্ধের নীলনকশা আগেই সাজিয়ে রেখেছিল; কিন্তু ইউক্রেনে বসবাসরত রুশভাষী জনগণ কী অবস্থার মধ্যে ছিল, সে সম্পর্কে কেউ কোনো কথা বলছে না।’

‘প্রকৃত সত্য হলো, ইউক্রেনে বসবাসরত রুশদের নিরাপত্তার জন্য আমরা এই অভিযান চলাতে বাধ্য হয়েছি। (অভিযান শুরুর পর থেকে) আমাদের ওপর একের পর এক নিষেধজ্ঞা-বাধা-হুমকি এসেছে, কিন্তু যে পরিস্থিতিতে আমরা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সে সময় ইউক্রেনের রুশ জনগণের নিরাপত্তার জন্য আর কোনো বিকল্প আমাদের সামনে উপস্থিত ছিল না।’

যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রীক বিশ্ব ব্যবস্থার সমালোচনা করে পুতিন বলেন, ‘১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন ও শীতল যুদ্ধের অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ঈশ্বরের বার্তাবাহক ভাবা শুরু করল; এমন এক বার্তাবাহক, যার কোনো বাধা নেই, বাধ্যবাধকতা নেই— কেবল আছে স্বার্থ; আর সেসব স্বার্থ তারা উচ্চারণ করত পবিত্র ধর্মীয় শ্লোকের মতো ।’

‘কিন্তু তাদের এই উত্থানের ভেতরেই সুপ্ত ছিল ভবিষ্যৎ পতনের সম্ভাবনা। কারণ, আন্তর্জাতিক রাজনীতি কেবল একটি জাতির স্বার্থে পরিচালিত হতে পারে না। এমনকি, সেই দেশ যদি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়, তবুও নয়।’

‘গত কয়েক দশকে বিশ্ব জুড়েই শক্তির নতুন নতুন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে। এটা অবশ্যই স্বীকার করে নিতে হবে।’

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১২:৫৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৮ জুন ২০২২

nypratidin.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর...

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930 

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আবু তাহের

নির্বাহী সম্পাদক : লাবলু আনসার