সোমবার ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুলশান থেকে গ্রেফতার রেয়ার সাঈদ মাদক বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিল : র‌্যাব

প্রতিদিন ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট ২০২২ | প্রিন্ট  

গুলশান থেকে গ্রেফতার রেয়ার সাঈদ মাদক বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিল : র‌্যাব

ঢাকার গুলশান থেকে গ্রেপ্তার ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদ (৩৮) ‘মাদক বিজ্ঞানী’ হতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাঈদ অধ্যয়ন করে “মাদক বিজ্ঞানী” হতে চেয়েছিল। তার বিরুদ্ধে মাদক, বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও মানি লন্ডারিং মামলা হবে।”

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাঈদের গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে এক্সট্যাসি, কুশ, হেম্প, মলি, এডারল, ফেন্টানিলসহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি প্রায় ৩ কোটি টাকা সমমূল্যের দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে দেশে অপ্রচলিত মাদক এক্সট্যাসির একটি ‘নেটওয়ার্ক’ সম্পর্কে জানতে পারে। এর ভিত্তিতে গুলশানে সাঈদের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মাদকের মধ্যে ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩টি এক্সট্যাসি, ২৮টি এডারল ট্যাবলেট রয়েছে। এর মধ্যে কুশ ও হেম্প দুটোই গাঁজার দুটো ধরন। আবার এক্সট্যাসি ও মলি মেথামফিটামিন মাদকের দুটি ধরন।

মঈন বলেন, ‘সাঈদকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যে মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে তাপনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি “গ্রো-টেন্ট”-এর মাধ্যমে বিদেশি জাতের কুশ তৈরির সেটআপ উদ্ধার করা হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাঈদ তার মাদক কারবারের বিষয়েও তথ্য দিয়েছেন বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাঈদ দেশে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও কলেজ থেকে পড়াশোনা করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বিবিএ ও এমবিএ করেন। পড়াশোনা শেষে ২০১৪ সালে দেশে ফিরে তিনি বাবার টেক্সটাইল ব্যবসা দেখভাল শুরু করেন।

গত চার বছর ধরে কানাডায় অবস্থানরত ফয়সাল নামে এক বাংলাদেশির মাধ্যমে সাঈদ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসির কারবারের অন্যতম হোতা ওনাইসী সাঈদ। দেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে।’

নতুন মাদকের চালান তারা দেশে কীভাবে আনে- এ প্রশ্নের উত্তরে মঈন বলেন, ‘এসব মাদক সাঈদ পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করে। মাঝে মধ্যে নিজেও বিদেশে গমন করে লাগেজে করে মাদক দেশে নিয়ে আসে। সাঈদ পার্সেলে মাদক আনার ক্ষেত্রে নিকট আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবের নামে নিয়ে আসতো। হুন্ডির মাধ্যমে মাদকের অর্থ পরিশোধ করত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।’

এসব মাদকের ক্রেতা কারা- সেই প্রশ্নে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অধিকাংশ ধনাঢ্য পরিবারের সদস্য। এছাড়া অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন পার্টিতে চাহিদার ভিত্তিতে সরবরাহ করত।’

সাঈদকে জিজ্ঞাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘সাঈদ জানায়, নতুন বিভিন্ন মাদকের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির ফলে সে এ নিয়ে অধ্যয়ন এবং গবেষণা শুরু করে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নত দেশে সরবরাহ করার জন্য সে কুশ প্ল্যান্টের ফার্ম তৈরি করে। টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়াল হিসেবে সাঈদ সাত মাস ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুরে এক ফ্ল্যাটের ভিতর তাপ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি “গ্রো-টেন্ট” এর মাধ্যমে কুশ চাষ করে। ইতোমধ্যে সে ওই ফার্ম থেকে একবার হারভেস্ট করে এবং পরে প্রসেস করে কুশ প্রস্তুত করে, যা বাংলাদেশে বিক্রিও করে।’

প্রসঙ্গত, সোমবার (১ আগস্ট) রাতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে অপ্রচলিত ও নতুন বিভিন্ন মাদক বিক্রি এবং তাপ নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কুশ মাদক তৈরির মূলহোতা সাঈদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে বাংলাদেশে একেবারেই নতুন মাদক কুশ, হেম্প, এক্সট্যাসি, মলি, এডারল, ফেন্টানিলসহ অন্যান্য মাদক জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করেন র‌্যাব সদস্যরা।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১০:১৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ আগস্ট ২০২২

nypratidin.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর...

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আবু তাহের

নির্বাহী সম্পাদক : লাবলু আনসার