
প্রতিদিন ডেস্ক | শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও ড. আকবর আলি খান সততা ও নিরপেক্ষতায় বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। এদিকে ড. আকবর আলি খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।
ড. আকবর আলি খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ড. আকবর আলি খানের বিদায়ে দেশের যে ইন্টিলেকচুয়াল ফিল (বুদ্ধিভিত্তিক জগৎ) রয়েছে সেখানে বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হলো। এ শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়।
ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল বলেন, আকবর আলি খান একজন সরকারি আমলা ছিলেন। এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন অর্থসচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এসব পরিচয় ছাপিয়ে নিজস্ব পরিচয় ধারণ করেছিলেন তিনি। দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ হিসেবে তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
‘আকবর আলি খানের অর্থশাস্ত্রের ওপর গবেষণা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং সেখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। তিনি ১৭টি বই রচনা করেছেন। এ বইগুলো খুবই উন্নতমানের গবেষণাধর্মী বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞানে এ গ্রন্থগুলো বিশেষ অবদান রেখে চলছে। কোটা সংরক্ষণ নিয়ে তার একটি গবেষণাধর্মী বই রয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত মূল্যবান।’
তিনি বলেন, সবশেষ তার কর্মস্থল ছিল বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্বাবদ্যলয়ে। আমি এখনো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে আসছি। সেখানে আমাদের নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ হতো। একাডেমিক মিটিং হতো। স্বল্পভাষী মানুষ ছিলেন তিনি। কিন্তু সবকিছুতে অত্যন্ত প্রজ্ঞার পরিচয় দিতেন।
আমি তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ তাতে বেহেশত নসিব করুণ এই দোয়া করি- যোগ করেন ড. মির্জ্জা আজিজুল।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা আছে। বিশেষ করে সততা নিয়ে এখন হরহামেশাই প্রশ্ন উঠছে। ড. আকবর আলি খান এসব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে ছিলেন। তার সততা এবং নিরপেক্ষতা ছিল আকাশসম। এটিই তাকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছে। সততা ও নিরপেক্ষতা একই সঙ্গে খুব কম মানুষ ধারণ করতে পারেন। তিনি পেরেছিলেন এবং সেটা শক্তভাবে ধারণ করেছেন।
ড. মির্জ্জা আজিজুল বলেন, তত্ত্বাধায়ক সরকারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন আকবর আলি খান। আমিও দায়িত্ব পালন করি ওই সরকারে। তবে আমার যোগ দেওয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করেন এবং এখানেও তিনি দৃঢ়তার পরিচয় দেন। পরে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর তাকে রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান করি। যদিও পরে সেই কমিশন অকেজো হয়ে পড়ে এবং সেখান থেকেও পদত্যাগ তিনি করেন। এভাবে পদত্যাগ করার দৃষ্টান্তও বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল।
বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খান। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।
শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শায়িত আকবর আলি : এদিকে ড. আকবর আলি খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এসময় তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গুলশান-১ আজাদ মসজিদে জুমার নামাজের পর তার জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হয়।
জানাজায় অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. জাফরুল্লাহসহ আকবর আলি খানের আত্মীয়স্বজন ও হাজারও সাধারণ মানুষ।
Posted ৫:৩১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
nypratidin.com | Nabil Nizam
আর্কাইভ ক্যালেন্ডার
Sun | Mon | Tue | Wed | Thu | Fri | Sat |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 |
8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 |
15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 |
22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 |
29 | 30 |